কমেছে স্বর্ণ ও রুপার দাম। স্বর্ণের দাম প্রায় সাড়ে চার শতাংশ এবং রুপার দাম সাড়ে ছয় শতাংশের বেশি কমেছে।
চলতি বছরের প্রথম সাড়ে ৭ মাস দাম ওঠানামার মধ্যে বেশ অস্থির সময় পার করেছে দেশের স্বর্ণের বাজার। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে মোট ৬ বার বাড়ানো হয় স্বর্ণেরর দাম। এর মধ্যে টানা ৪ বার বাড়ে মূল্যবান এই ধাতুর দাম। আর দামের বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে দুইবার কমানো হয় এই আভিজাত্যের প্রতীকের দাম।
অর্থাৎ ৫ জানুয়ারি থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত ৮ বার স্বর্ণের বাজার দর ঠিক করে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি, বাজুস। তবে, দেশের ব্যবসায়ীরা একবারও হাত দেননি রুপাতে। অর্থাৎ সাড়ে ৭ মাসে দাম ওঠানামায় বাজারে সোনা অস্থিরতা দেখালেও মূল্যবান এই ধাতুর পাশে নীরব থেকেছে রুপা।
এদিকে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দরপতন শুরু হয় গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস (৭ আগস্ট) থেকে। অবশ্য এ দরপতন শুরু হওয়ার আগে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম রেকর্ড ২ হাজার ৭৫ ডলারে ওঠে।
এরপর দফায় দফায় দাম কমে গত বুধবার (১২ আগস্ট) এক পর্যায়ে এক হাজার ৮৯৫ ডলারে নেমে আসে স্বর্ণের আউন্স। অর্থাৎ তিনদিনের ব্যবধানে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১৮০ ডলার পর্যন্ত কমে যায়। এর মধ্যে মঙ্গলবারই কমে ১১২ ডলার।
বিশ্ববাজারে এই রেকর্ড দরপতনের প্রেক্ষিতে বুধবার দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। ভরিতে সাড়ে তিন হাজার টাকা কমানো হয় স্বর্ণের দাম।
অবশ্য দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর আগেই বিশ্ববাজারে আবার দাম বাড়ার আভাস দেখা দেয়। বুধবার লেনদেনের শুরুতে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২১ ডলার কমে গেলেও, লেনদেনের পরবর্তী সময়ে প্রায় ৩০ ডলার বেড়ে যায়। এরপর বৃহস্পতিবারও (১৩ আগস্ট) স্বর্ণের দাম বাড়ে। এতে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম এক হাজার ৯৬০ ডলারে উঠে আসে।
তবে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শুক্রবার (১৪ আগস্ট) আবারও দরপতন হয়। এ দিন প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১৬ দশমিক ২০ ডলার কমে এক হাজার ৯৪৩ দশমিক ৬৫ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম কমেছে ৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
এদিকে স্বর্ণের পাশাপাশি গত সপ্তাহে ব্যাপক অস্থিরতার মধ্যে দিয়ে গেছে রুপার দামও। স্বর্ণের পাশাপাশি গত মঙ্গলবার বড় দরপতন হয় রুপার দামে। একদিনে রুপার দাম ১২ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। তবে বুধবার ও বৃহস্পতিবার রুপার দাম কিছুটা বাড়ে।
অবশ্য শুক্রবার আবার দরপতন হয়। এ দিন প্রতি আউন্স রুপার দাম এক দশমিক ১৯ ডলার বা ৪ দশমিক ৩১ শতাংশ কমে ২৬ দশমিক ৪২ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে রুপার দাম কমেছে ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
এদিকে আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষণ নিয়ে করা দেশি-বিদেশি বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার পূর্বাভাস রয়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে চলতি বছরের শেষ নাগাদ প্রতি আউন্স সোনার দাম ২১ হাজার ডলার পার হবে। আর আগামী দুই বছরের মধ্যে মূল্যবান এই ধাতুর প্রতি আউন্সের দাম দাঁড়াবে সাড়ে ৩ হাজার ডলারে। তবে করোনাকাল পার করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এ দাম কমে যেতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকেই।